কম্পিউটার স্মৃতি

২০০১ সাল।
এলাকার বড়লোক ভাই ব্রাদাররা কম্পিউটার কেন শুরু করছে। উইনডোজ বা কোন সফটওয়্যার ইন্সটল দিতে আমাদের ডাকতো। কাজ শেষে আমাদের বিস্কুট আর চা-কফি খাওয়াতো। আমরা কয়েকজন পোলাপান এলাকার কম্পিউটারওয়ালাদের কাছে বেশ পরিচিত হয়ে ওঠলাম।
একজন ২৫৬ র‌্যাম এর প্যান-৪ কিনছে। আমরা প্রথম উইনডোজ এক্সপি ইনস্টল করার স্বাদ পেলাম। এই প্রথম কমান্ড প্রমোটে fdisk না লিখে পার্টিশন করলাম। উইনডোজ ৯৮ প্রায়ই হ্যাং করতো, মাউস নড়তো না। এই এক্সপিতে এই সমস্যা নাই। আমরা অবাক হয়ে এক্সপির ওয়ালপেপারগুলো দেখলাম। আর ভাবলাম কবে আমার পিসিটা এরকম আপগ্রেড হবে।

কেউ কেউ কম্পিউটার কিনতে হলে আমাদের নিয়ে যেতো। মার্কেটে তখন ১৭ ইঞ্চি ফ্লাট মনিটর নতুন। স্ক্রিনে হাত দিলে শক করতো। আমরা রড দিয়ে আর্থিং করার সাজেশন দিয়েছিলাম।

এমএস ওয়ার্ড আর এক্সেল শিখার জন্য এক বড়ভাই এর দোকানে ভর্তি হলাম। একদিন কয়েকটা প্রগ্রাম মিনিমাইজ অবস্থায় পিসি সাটডাউন করে দিলাম। এজন্য আমাকে বেশ বকুনি দিলো। সব প্রোগ্রাম বন্ধ না করে  সাট ডাউন দিলে পিসি নষ্ট হয়ে যাবে। :p

কম খরচে কম্পিউটার কেনার জন্য পুরানো কম্পিউটার মার্কেট এলিফ্যান্ট রোডের দোকানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এক পরিচিত ভাই এর পরিচিত দোকানে গিয়ে অনেকগুলো ব্র্যান্ড রিকন্ডিশন পিসি দেখলাম। অনেক দামাদামির পর শেষ পর্যন্ত কিনা হলো না।

৩০০ মেগাহার্জ সাইরিক্স প্রসেসরের একটা পিসি ব্যবহার করতাম। তারপর সেটা আপগ্রেড করে ৪৬০ মেগাহার্জের এএমডি প্রসেসর কিনলাম। পেন্টিয়াম টু এবং থ্রির স্লট প্রসেসরের পিসিও চালিয়েছি। আর এগুলো সবই পুরানো। নতুন কম্পিউটার তখন কিনি নাই। আর পিসির ভিজিএ আর র‌্যাম এর ঝামেলা লেগেই থাকতো। নিজেরা পরিবর্তন করে নিতাম।

কম্পিউটার সইন্সে পরার সময় একটা বড় সময় নিজের কম্পিউটার ছিল না। ল্যাবে সি প্রোগ্রামিং নিয়ে অনেক বেশি সময় কাটিয়ে দিতাম। প্রতি সেশনের টাকা আর নিজের খরচ চালাতে হিমসিম অবস্থা। আমার মতো অনেকেরই এই অবস্থা ছিল। তবে যারা পড়ার পাসাপাসি চাকরী জুটিয়ে ফেলেছিল তাদের অবস্থা স্বচ্ছল ছিল।

 

Leave a Reply