দান করা

১) শীতের পোষাক দানঃ

এ বছর যে সকল দরিদ্রদের শীতের পোষাক নাই তাদের অধিকাংশই আগের বছর কম দামের শীতের পোষাক কিনেছে যা এ বছর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অনেকে সুন্দর করে যত্ন করে রাখে নাই। শীত বস্ত্র বিতরণের সাথে যারা জরিত তাদের বিতরণের সময় এটা সংগ্রহ করার ব্যপারে সচেতন করতে পারেন যাতে পরের বছর তার সমস্যা না হয়। আবার একটু ভাল মানের বস্ত্র প্রদান করা যেতে পারে। কিছু ওয়াশেবল জ্যাকেট আছে যা ৪/৫ বছরে নষ্ট হওয়ার না, ময়লাও হয় না তেমন। এগুলো অল্প হলেও দান করা ভাল। কম দামের কম্বলগুলো সাধারণতঃ বিতরণ করা হতে দেখি বেশি। এগুলো ময়লা হয় এবং কয়েকবার ধুইলে আর গায়ে দেওয়ার মতো অবস্থায় থাকে না। সম্ভবতঃ শীত শেষে বিছানা করার জন্য ব্যবহার করে বা ফেলে দেয়। দুঃখের কথা হলো, অনেক লোক আছে যাদের ঘরই নাই, কোথায় তারা তাদের শীতের পোষক সঞ্চয় করে রাখবে !

২) শিশুদের পোষাক দানঃ

শিশুদের সাধারণ পোষাক বা শীতের পোষাক ব্যবহার হতে হতে বড় হয়ে যায়। তাই নতুন থাকে। ধনীদের বাচ্চা হলে অনেক জামা-কাপড় গিফট আসে। এবছরের শিশুর জন্য যে শীতের পোষাক কিনেছেন তা পরের বছর শীতে বাচ্চার গায়ে লাগবে না। ধুয়ে আয়রণ করে প্যাক করে রাখা যেতে পারে পরের বছর দান করার জন্য। পারলে কিছু নতুন পোষাক কিনে এক সাথে দান করার পরামর্শ দিলাম। ৩)মাদ্রাসা বা এতিমখানায় কম দামের কম্বল বা অরগানিক তুলার লেপ না বানিয়ে। ফাইবার তুলার লেপগুলোকে বেশি প্রায়রিটি দিচ্ছি। এগুলো ধুয়ে নতুনের মতো বানিয়ে ফেলা যাবে।বাংলাদেশ এখন এত দরিদ্র দেশ না যে মাদ্রাসা ছাত্ররা ফ্লোরে ঘুমাবে তাদের জন্য কাঠের অন্ততঃ চৌকির ব্যবস্থার উদ্যোগ নিলে অনেকেই দান করে ব্যবস্থা করে দিবে আশা করি।

৪) শহরের ওয়ার্কারঃ

শহরে অনেক দরিদ্র লোক কাজের জন্য আসে। ঘর ভাড়া দিয়ে থাকা তাদের জন্য অসম্ভব। যে এলাকায় তারা দিন হাজিরায় কাজ করে, যাদের কাজ করে তারা চাইলে তাদের জন্য ভাল থাকার ব্যবস্থা করে দিতে পারে। অনেকে রাস্তার পাসে শুয়ে থাকে। সকালে বড় বড় দালান বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে। কি অদ্ভুৎ জীবন তাদের ও আমাদের। এত বড় ভবন যারা তৈরী করলো তাদের সাময়ীক একটা থাকার ব্যবস্থা ভবন মালিকের করা উচিৎ।ভবন মালিক হতে পারে অনেক দানশীল, অনেক ভাল ব্যক্তি যিনি আসলে জানেন না দিন মজুর ভাইটি কোথায় থাকেন। তাদের খবর নেওয়া বড় একটা কাজ। শুধু এই সেক্টরই যে কোন সেক্টরে আপনার কাজ যারা করে দিচ্ছে তাদের খোজ খবর রাখা আমাদের বড় দায়িত্ব।

৫)দান করা কঠিন কাজঃ

দান করাটাও সহজ কাজ না। দানের টাকা অনেকে নষ্ট করে ফেলে। আবার হ্যাসেলের জন্যও অনেকে দান করেন না। অনেক বাটপারের পকেটে টাকা ঢুকে যায়। অনেক বৃদ্ধ দানের টাকা নিজেরা না খেয়ে তার সন্তানদের দিয়ে দেয় যারা এই বৃদ্ধের কাজেও লাগে না ! এমতাবস্থায় আমার একটা আইডিয়া আছে। কোন কোন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে কোন দোকান বা হোটেলের সাথে নিয়মিতো খাবার প্রদানের কন্টাক্ট করে দেওয়া। নিয়মিতো সে ২টা করে রুটি নিয়ে যাবে- মাস শেষে পেমেন্ট করে দিবেন। এই ধরণের কাজ খুব কম খরচে করা যায়। এখন অনলাইনের যুগ। প্রতি মাসে কিছু খাবার অর্ডার করে পাঠানোও যেতে পারে। ১০/২০ বা যত জনকে দান করবেন তাদের মোবাইল নম্বর নিয়ে অনলাইনে অর্ডার করে দিলে হ্যাসেল কমে যাবে।গরীব আত্নিয়দের দানের ক্ষেত্রে এটা ভাল কাজে লাগতে পারে।