খাদ্যাভ্যাস পরিকল্পনা

বয়স ৩০ এর উপরে ওঠার পর যেভাবে রোগ আক্রমণ করছে তেমনটা আগে কখনো করে নি। আর বেশিভাগই খাদ্যাভ্যাস জনিত মনে হচ্ছে।  অনেকের অনেক রকম সাজেশন থেকে কয়েকটা মেনে চলার চেষ্টা করবো।

নিতান্তই ব্যক্তিগত কিছু পরিকল্পনও আমি লিখে রাখছি। এটা নিজেকে শিখানোর জন্য, মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। নিজেকে ঠিক করার জন্য।

খাবারের বেপারে সচেতন হতে হলে কিন্তু নিজেকেই কিছু না কিছু রান্না বা খাবার তৈরী শিখতে হবে। ইদানিং আমি কয়েক রকমের জুস বানানো শিখতেছি। রমজান মাসে সরবত নিয়তমি বানিয়েছি, ভালই হয়েছে। 🙂 আলহামদুলিল্লাহ।

খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে গিয়ে মজার খাবার বাদ দিব না কিন্তু। বা তিতা/মজা না এমন খাবার মেনুতেও ঢুকাবো না।

  • প্রতিদিনই শাক খেতে চাই। আমি বাজার করার বেপারে বে-খেয়ালী হওয়ার অনেক সময় প্রতিদিন শাক খাওয়া হয় না। এ জন্য অবশ্য বাগান করার কথা ভাবছি। ঘরের মধ্যে বাগান করবো। খরচ একটু বেশি হবে। লাউ সাক, পুঁই, পালং, লালসাক, ডাটাসাক আমার প্রিয়। ছোট চিংড়ির সাথে একটু ঝোল করে রান্না করলে দারুণ লাগে।

pui

  • রান্নাহীন খাবারের পরিমান বাড়াবো। রান্না করা খাবারে স্বাদ আনতে গিয়ে আমরা যেসব মিশাই তাতে অনেক কু-খাদ্য থাকে। যেমন ধরুন তেল ও মসলায় আনেক ক্ষতিকর জিনিস এসে পরে আজ-কাল। রান্নাহীন খাবার কয়েক ধরনের হতে পারে- যেমন-

(ক) শরবত ও জুসঃ লেবুর শরবত তো আমার অনেক প্রিয়। আর অন্য কোন জুস বা শরবতের সাথেও একটু লেবু মিশালেও চমৎকার হয়। আমি জামের জুস খেয়েছেন কখনো? বানিয়ে দেখুন অনেক মজা। 🙂 আমি আমের জুস বানাই না কখনো। আমি কামরিয়ে আম খাই। এটাই মজা। বরফ ঠান্ডা করে মালটার বা লেবুর সরবত দারুন লাগে। পাকা পেপে বা বেল জুস বানানো বা না বানানো উভই মজাদার। আমার শরীর অনেকটা রুক্ষ আর পেট আনেক সময় কষা হয়। তাই Aloe Vera বা ঘৃত-কুমরী আর ইসবগুলের শরবত আমার জন্য প্রয়োজন। Aloe Vera-র অনেক রকম গুণ আছে। আমি তেমন জানি না। খুজে দেখতে পারেন। শৌন্দর্য সচেতন মেয়েদের তো এটা সম্পর্কে জানার কথাই। যে কোনএকটা শরবত সকালে অন্ততঃ খাওয়ার পরিকল্পনা রাখলাম।

Welcome drinks (জাম এর জুস)

মধুও আমার প্রিয় খাবারের মধ্যে একটি। বিভিন্ন সরবতে মধু মিশিয়ে ভিন্ন স্বাদ আনা যায়।

(খ) ফলঃ রান্নাহীন খাবারের মধ্যে দেশি ফলই অনেক খাওয়া যায়-টাকাও কম লাগে। আঙ্গুর বা স্ট্রবেরীর যে দাম তাতে আমি এগুলো কিনে বেশি খেতে পারব না, মাঝে মাঝে অবশ্য খাওয়া যাবে। তবে দেশে এখন আম, কলা, পেপে, বেল, পেয়ারা,গাব, লিচু, আনারস অনেক ফলে। বুদ্ধি করে ফল বেশি খেলে শরীর অনেকটা তাজা রাখা যাবে। আমি কিন্তু কাঠালের কথা বলি নাই।আমার পেটের জন্য এ ফলটি কেন যেন মানাচ্ছে না। ছোট ছোট কিছু ফল আছে- আমি রাস্তায় দেখলে কিনি- অনেক জায়গায় অনেক রকম নাম এগুলোর। বেত্তুইন (বেতফল), কাউ, টেপাফল, কাঠ লিচু ইত্যাদি। এগুলো খাওয়ার পরিমন বাড়াবো।

(গ) স্পাইসিঃ আমি আঁচার এবং মোরব্বা পছন্দ করি। আমসত্ত আর বিভিন্ন ফলের শুকনো রূপ আমার পছন্দ। এগুলো যেহেতু একবার কিনলে অনেক দিন খওয়া যায়। তাই কিছু কিনে রাখবো। খেজুর, আনারস, স্ট্রবেরীসহ অনেক ফলই ইদানিং শুকিয়ে প্রক্রিয়াযাত করে বিক্রি করে। নিজে কয়েকটা পদ্ধতি জেনে রাখলে দারুন হবে। কম দামের সময় কিনে শুকিয়ে পরে খাওয়া যাবে।

শুকনো আনারস
শুকনো আনারস

(ঘ) সব্জি ও সালাতঃ শরিষা পাতা, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, সেলারী পাতাসহ অনেক পাতাই কাচা খাওয়া যায়। সেই সাথে গাজর, শসা, টমেটোসহ অনেক শব্জিই আছে কাচা খাওয়ার অভ্যাস বাড়াবো।

  • রান্না করা খাবারের মধ্যে ভাতের পরিমান কমাতে চাই। পারবো কিনা জানি না। কেনা খাবার যেমন-কেক, বিস্কুট, ড্রিংকস, পুরি, সিঙ্গারার পরিমানও কমাবো। বা এগুলো খেলে বেশি পরিমান সালাত খেয়ে নিবো ইনশাল্লাহ।
  • অনুষ্ঠানে গিয়ে বা মাঝে মাঝে ভাল কোন রেস্টুরেন্টে তেল-ঝালযুক্ত খাবার কিন্তু ছাড়ার পরিকল্পণা নাই। তবে অন্য সময় নিয়মটাকে একটু উন্নত করবো। গরুর গোস্ত খেলে বেশি করে ইসবগুলের ভুষি খেয়ে নিব, যাতে কোষ্ট কাঠিন্ন না হয়। অনেক দিন আগে ডাক্তার আমাকে এ পরামর্শ দিয়েছিল।

নিজের অভ্যাস কতটুকু পরিবর্তন করতে পেরেছি তা জানাবো ইনশাল্লাহ। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 

Image by Jerzy Górecki from Pixabay

3 Comments

Comments are closed.