যে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র টাকাকেই সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করে, যে সমাজে রিক্সাওয়ালাকে থাপ্পর মারার সহজ। যে রাষ্ট্রে প্রাইভেটকার উল্টা পথে চলতে পারে, রিক্সাকে পিসিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। যে রাষ্ট্রে সবাই লকডাউন পালন করলেও গার্মেন্টস কর্মীদের কাজ করে যেতে হয়, সেই রাষ্ট্র আপনার সন্তানদের জন্য নিরাপদ নয়। আপনার সন্তান আপনার টাকার অহংকারে অথবা অন্যের টাকার পিছনে ঘুরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অপরাধী হয়ে যেতে পারে।অপরাধীদের আমি ভিকটিম মনে করি।
অপরাধীদের আমি ভিকটিম মনে করি।
পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র তাদেরকে অপরাধী বানায়।
মুনিয়া ও পরীমনি উভয়ের জীবন কেস স্টাডি হিসেবে নিলে দেখবেন, তাদের অভিভাবক ছিলনা। তারা শুধুমাত্র তাদের সৌন্দর্যের মূল্যায়ন পেয়েছে, সৌন্দর্যকে টাকায় রূপান্তরিত করতে পেরেছে। তারপর মানুষ তাদেরকে আরো বেশি সম্মান দিতে থাকে।
অন্যদিকে দরিদ্র পরিবারের অসুন্দর মেয়েদের পরিবার থেকে গঞ্জনা পেতে হয়, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য দেখতে পায় তারা সমাজে।
দরিদ্র শিশু, কিশোর ও যুবক বন্ধুমহলে ময়লা জামা বা ছেড়া স্যান্ডেল এর কারণে হাস্যরসের খোরাক হয়ে যায়।
ধনি বন্ধু ও আত্মীয়কে মানুষ বেশি সম্মান দিতে থাকে। কোন ব্যক্তি খারাপ হলেও, মদখোর হলেও, দুর্নীতিবাজ হলেও, খারাপ ব্যবহারকারী হলেও তার যদি বাড়ি-গাড়ি থাকে তাহলে সে সব জায়গায় সম্মান পায়। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের তাকে মেম্বার করে নেয়। মসজিদ কমিটি, পঞ্চায়েত , ক্লাব, বার সব ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাকে রাখা হয়। টাকা হলে মদের লাইসেন্স পাওয়া যায়, টাকা হলে সুন্দর নারীকে নিয়ে ভ্রমণে গেলে শতশত সিকিউরিটি নিরাপত্তা দেয়। অপরাধ করাকে তারা তাদের জীবনের জন্য উপকারী বলে মনে করে।
শিশু-কিশোর ও যুবকরা তাই ধনী হতে চায়, ক্ষমতাশালী হতে চায়। লক্ষ লক্ষ কিশোর, যুবক ও যুবতী এই পথে আছে।
আপনি রাজনৈতিক মিছিলে তাদের পাবেন, আপনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদেরকে পাবেন। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় আপনি তাদেরকে পাবেন, নাটক সিনেমায় আপনি তাদেরকে পাবেন। রাজনীতিতে ও সিনেমায় একই সাথে টাকা ও সম্মান পাওয়া যায়। এজন্য সেখানেই যুবক ও যুবতীরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
যে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র টাকাকেই সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করে, যে সমাজে রিক্সাওয়ালাকে থাপ্পর মারার সহজ। যে রাষ্ট্রে প্রাইভেটকার উল্টা পথে চলতে পারে, রিক্সাকে পিসিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। যে রাষ্ট্রে সবাই লকডাউন পালন করলেও গার্মেন্টস কর্মীদের কাজ করে যেতে হয়, সেই রাষ্ট্র আপনার সন্তানদের জন্য নিরাপদ নয়। আপনার সন্তান আপনার টাকার অহংকারে অথবা অন্যের টাকার পিছনে ঘুরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অপরাধী হয়ে যেতে পারে।