রোজার কয়েকটা দিন

আমি তখন ব্যাচেলর। বাড্ডায় একা একা থাকি। নিকেতনের একটা অফিসে চাকরী করি। একা সেহেরী, একা ইফতার করি।

একাকিত্ব দূর করতে একদিন গুলসান-১ পিজা হাটে ইফতার করতে গেলাম।
আনলিমিটেড পিজা সম্ভবতঃ ১০০০ টাকা ছিল। ইফতারের আগে সবাই একটা করে পিজা নিয়ে বসে আছে। হালকা ইংরেজী গান বাজছে স্পিকারে। বাইরে আজান হয়ে গেল, ভিতরে শোনা গেল না। বয়রা জানালো আজান হয়েছে। পানি পান করে পিজা খাওয়া শুরু হলো। বের হয়ে দেখলাম জামাত মিস হয়ে গেছে।

আরেক দিন ভাবলাম এলাকার মসজিদে ইফতার করি। দরিদ্র শ্রেনীর খেটে খাওয়া লোকদের এক অংশ মসজিদে ইফতার করতে এসেছে। সেদিন সম্ভবতঃ অন্যদিনের চেয়ে ভাল ইফতার ছিল।

আরেকদিন কেএফসি তে ইফতার করলাম। আলাদা ইফতার আইটেম ছিল না। ফ্রাইড চিকেন দিয়েই ইফতার সারা।

আরো কয়েক দিন, অফিসে (নিরাপত্তার জন্য) রাতে যারা থাকে তাদের সাথে ইফতার করি। বেশ মজা করে ইফতার করি।

সন্ধা রাতে রান্না করে রাখতাম এবং সেহেরীতে খেতাম। একদিন খুব ক্লান্ত হই এবং রান্না করে রাখি নি। সেহেরীর সময় উঠে কোন একটা রেস্টুরেন্ট খুজতে লাগলাম। পেলাম না। সেহেরী খাওয়া হয় নি।

তখন চট্টগ্রাম থাকি। কনকর্ডে চাকরী করি। ঈদে অফিস করতে হবে আমাদের। তাই রুমমেটরা বাড়ি যাই নাই। দুপুরে অফিসে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। রাতে বুয়ার রান্না খাই।
ঈদের দিন। বাড়িওয়ালা আন্টি রাতে তার বাসায় খেতে বললো। আমরা ফাতেমাকে রাতে রান্না করতে না করে দিলাম। রাতে আন্টি বললো বাবা, সব খাবার শেষ, তোমাদের কালকে খাওয়াই? বেশ লজ্জায় পরে গেলাম। আমি আর একজন একটু পরে গিয়ে বললাম, আন্টি বাসায় তো রান্না হয় নাই। সামান্য কিছু অন্ততঃ করেন। কিছু সময় পরে সে খাবারের ব্যবস্থা করলো।