আমরা গরীব মানুষেরা জন্মগতভাবে দৈনিক বা মাসিক টাকা আসতে এবং খরচ করতে দেখেছি। আমাদের মনেও এমন চিন্তাটা গেথে গেছে। ব্যবসা বা চাকরী – এই দুইটা পথকেই টাকা আয়ের উৎস মনে করি।
যারা ধনী, টাকা পয়সার বিষয়ে সচেতন, যারা খুব দ্রুত ধনী হয়েছে তাদের অনেকেই ব্যবসা বা চাকরীর মাধ্যমে ধনী হয় নাই।
-তাহলে কিভাবে তারা এত টাকার মালিক হইছে? নিশ্চই দূর্নীতি!
না। আরেকভাবে।
মাসিক আয়কে যারা গুরুত্ব দিয়েছে
- ১. আমি এমন অনেককে চিনি যার বিএসসি পাস করতে ৬ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করেছে। ভেবেছে ভাল বেতনে চাকরী পাবে। ১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরী শুরু করেছে।
- ২. পঞ্চাশ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে সরকারী চাকরী সিকার দেখছি। বেতন লাখ টাকাও পাবে না।
- ৩. শিশু শ্রেনী থেকে ভাল স্কুলে পড়ানোর উদ্দেশ্য ছেলে ভাল মানুষ হবে তা না। ভাল চাকরী পাবে।
- ৪. বাবার জমি বিক্রি করে ব্যবসায় প্রবেশ করেছে অনেকে। মাসিক লাভের টাকাগুলো জমিয়ে এই জীবনে আর জমি কেনা সম্ভব হবে না।
- ৫. এমন অনেক স্টুডেন্ট আছে বাবা মা ছোট বেলা তার পড়ালেখায় এত বেশি খরচ করে ফেলেছে, ইউনিভার্সিটি পড়ার মতো অবস্থা পরিবারে নাই। কাজে লেগে যেতে হয়েছে। সে যদি সরকারী বিদ্যালয়ে পড়তো হয়তো গ্রাজুয়েট হতে পারতো।
- ৬. কেউ এত বোকা যে নিজের জমি বিক্রি করে ব্যাংকে টাকা রেখে মাসিক সুদ খেয়ে জীবন যাপন করছে। অথচ সেই জমির ভ্যালু তার প্রাপ্ত টাকার ১০গুন করে বাড়তো। যেহেতু জীবন ধারণের জন্য তার ক্যাশ টাকা দরকার, সে অল্প কিছু অংশ বেচে খেলেও অন্য অংশের দাম বেড়ে লাভ হতো।
- ৭. কিছু লোক নিজের স্বর্ন বিক্রি করে পরিচিত আত্নিয়কে ধার দিয়েছে যাতে ব্যবসা করে কিছু লাভ দেয়। তারা এই টাকা ফেরত নিতে পেরেছি কিনা বা আবার স্বর্ণ কিনতে পারছে কিনা জানি না। স্বর্ণের দাম ২০ বছরে ১৮গুন হয়েছে।
অন্যদিকে
- কিছু মানুষ এমন কিছু ফিক্সট এসেট কিনেছিলা যার দাম ২০ বছরে ১০০ গুন থেকে ৫০০ গুন হয়েছে। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত এলাকায় যারা জমি কিনেছে তাদের অনেকে এই তালিকায়।
- কিছু মানুষের দ্রুত ধনী হওয়ার কারন মাইগ্রেন্ড হওয়া। উন্নত দেশে একা বা পরিবারসহ অনেকে সিটিজেনশীপ নিয়ে সেখানে সেটেল হয়ে গেছে। তারা মাসিক আয় বাংলাদেশে এসে বড় অংকের হয়ে যায়। বাংলাদেশে তাই সে কিছু জমি কিনে এবং ভবন বানায় যার কারনে তাকে আমরা ধনী শ্রেনী হিসেবেই দেখি।
একটা হিসাবঃ
সম্পদের দাম বাড়াটাকে যদি বেতন মনে করেন এবং মাসিক কত টাকা বেতন পেলেন এভাবে হিসাব করে দেখতে পারেন।
আমার জানা একটা জমি ১৪ বছর আগে কেনা হয়েছিল ৫ লাখ টাকায়। এটি বর্তমানে দাম ৬০ লাখ টাকা। তার মানে ৫ লাখ টাকা ইনভেস্ট করে ৫৫ লাখ টাকা লাভ হয়েছে ৫৫০০০০০ ভাগ ১৬৮ মাস=৩২,৭৩৮ টাকা প্রতি মাসে।
এভাবে কেউ ফিক্সট এসেটের মাসিক লাভ হিসাব করে না। কিন্তু অনেকে ঠিক এভাবেই ধনী হয়েছে।
Image by Džoko Stach from Pixabay