সখের মৃত্যু ও মটিভেশন

কাজ করার জন্য বা পড়ালেখায় মানুষ নিজের আগ্রহকে প্রাধান্য দেয়। সে ভাবে সে ই বিষয়ে কাজ করবে। তারপর গবেষণা ও চিন্তা। কিন্তু তাকে সারভইভ করতে হবে আর তাই সে এটার সাথে আয়ের হিসাব মিলায়।

একটা সময় সে টাকার জন্য তার আগ্রহের কাজের টারগেট নির্ধারণ করে। সেখানে মনে মনে সময়-টাকা একটা গ্রাফ তৈরী করে। এটা তৈরী করা মানে তার প্যাশন মরে গেছে। সে প্যাশন সারভাইভ করার জন্য নিজের খরচের বদলে সেখান থেকে আয় করতে চাচ্ছে।

বিষয়টা জটিল মনে হলে উদাহরণ দেই- কোন একজন ফটোগ্রাফার সুন্দর সুন্দর ছবি তোলে এবং তা আপলোড করে, বা ভিডিওগ্রাফার ভিডিও তৈরী করে মনের সুখে। তো তিনি দেখলো এগুলা করে অনেকে ভাল টাকা কামাচ্ছে।

তিনি নিজে এই টাকা আয়ের কাজে হাত দিলো। তিনি দেখলো তিনি যে ক্যাটাগরীল ছবি তোলেন বা ভিডও তৈরি করেন তার বাজার ভাল না। এগুলো কেউ টাকা দিয়ে কিনবে না। সে তার ধরণ পাল্টালো। এবার সে যে কাজ পছন্দ না করে সেই কাজকে রপ্ত করতে গেল এবং ভাল ফল না পেয়ে ফটোগ্রাফী ছেড়ে দিল। আপনি ডিমোটিভেটেড।

 

এভাবে সাধারনতঃ মানুষের সখ, আগ্রহ এবং সৃজনশীলতা ধ্বংশ হয়।

কিন্তু এটিকে বাঁচানো যায় কিভাবে? দুইটা পথ আছে-

  • ১. টাকা আয়ের পথ থেকে আপনার আগ্রহের বিষয়কে আলাদা করে রাখতে পারেন। বরং টাকা খরচ করতে হতে পারে- এটা ভেবে কাজ করুন। টাকা আয়ের জন্য অন্য পথকে বেছে নিন।
  • ২. আপনি প্যাশনকেই পেশা বানাতে চাইলে আপনাকে প্রথমেই টারগেট বানাতে হবে। আগে যে বলেছিলাম সময় আর টাকার যে গ্রাফটা বানিয়েছিলেন। সেটা না। এখন থাকবে শুধুই সময়। কত দিন আপনি আপনার পছন্দের কাজটি শূণ্য টাকা লাভে করে যেতে থাকবেন? তত দিন আয়ের হিসাব না খুলে কাজ করে যেতে থাকুন। আপনার টারগেট শূণ্য টাকা রাজগারে কাজ করে যাওয়া।

কয়েক ধরনের প্যাশনের কথা লিখি-

  • মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে আমি দেখি তারা আল্লাহর জন্য কাজ করে যেতে চায়। সারা জীবন। এখন তাদের সময়কে তারা অনেক সময় মাদ্রাসার শিক্ষকতা, মসজিদের ইমাম বা অন্য কোন দীনি কাজে ব্যয় করেন। কিন্তু তারা সমাজের প্রভাবশালীদের প্রভাবমুক্ত হয়ে কি কাজ করতে পারেন?
  • একটা সময় অনেক অনেক বাংলা ব্লগার নিজেদের ব্লগ খুলেছিলেন। এখন অবশিষ্ট আছে অল্প। অনেকে এটাকে তাদের সখ মনে করতেন। হয়তো সেই সখ আর বেঁচে নাই। আথবা আয়ের পথ না দেখে বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু যদি এটা কতদিন আয় ছাড়া চলবে সেই চিন্তা আগে থেকে করে রাখতো তাহলে হয়তো আরো ভাল কিছু হতে পারতো।