জাতীয়তাবাদ আর দেশপ্রেমই বড় সাম্প্রদায়িকতা

কথাটা শুনিয়া সবাই বলিয়া উঠিতে পারে- আমার লজিক লেভেল এত মোটা যে জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেমই আর সাম্প্রদায়িকতার মধ্যে লাইন টানিতে পারি নাই।

ইদানিং কালে কিংবা পূর্ব কালে দেশে দেশে যত যুদ্ধ-বিগ্রহ দেখেছিলেন সবই জাতীয় চেতনার ফসল।
১. ধরা যাক, আপনার দেশ অন্য কোন দেশকে অবৈধ ভাবে আক্রোমন করলো। আপনি আপনার জাতীয়তাবোধের কারনে বলেন বা দেশপ্রেমের কারনে বলেন নিজ দেশের সৈন্যবাহিনীর পক্ষ হইবেন। আপনার দেশপ্রেমখানা বেশি উৎলাইয়া পরলে আপনি হয়তো যুদ্ধ অংশগ্রহনও করতে পারেন।
আপনি জানেন যে যুদ্ধটা লাগানো আপনার দেশের উচিৎ হয় নাই। আপনি কি আপনার নিজ দেশের সৈণ্যদের বিরুদ্ধে কখনো অবস্থান নিবেন। নিতান্ত দেশপ্রেম আর জাতীয়তাবোধ না থাকলে সেটা করবেন। এখানে জাতীয় চেতনার একটা খারাপ বিষয় তুলে ধরলাম। আর এই ছোট্ট খারাপ বিষয়টাই দেশে যুদ্ধ লাগানোর জন্য যথেষ্ঠ।
ধরা যাক যুদ্ধটায় অনেক লোক মারা গেল এবং নতুন দেশটি আপনার দেশের অন্তর্ভূক্ত হলো। আপনি আনন্দিত হইবেন। আপনার রস্ট্রপ্রধানকে স্যালুট দিবেন। আর যদি হেরে যান এবং অন্য রাজার নিয়ন্ত্রনে চলে যান, তখন বলবেন আক্রোমনটা ভুল হইছিল।
২. মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা। অল্প কিছু পশ্চিম পাকিস্তানি বুঝতে পেরেছিল। তাদের যুদ্ধটা অবৈধ। অল্প কিছু লোক পশ্চিম পাকিস্তানে বসে নিজেদের সৈন্যের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেছিল। তাদের কাছে-নৈতিকতাটাই বড় ছিল।
৩. আম্রিকা দেশে দেশে যুদ্ধ লাগায়। তাদের দেশের কিছু লোক এখনো আছে যারা এইসব কর্মকান্ডের বিরোধী। তাদের সবার কাছে নৈতিকতাটা বড়-তা কিন্ত নয়। তারা একটু মেধাবী। তারা জানে এটা তাদের জন্য ক্ষতিকর। খুব অল্পকিছু লোকই আ্ছে যারা জাতীয়তাবোধের সাম্প্রদায়িকতা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে।
৪. মায়ানমারে রোহিঙ্গা উদ্ধাস্তুরা যখন বাংলাদেশে আসতে আর নিয়মিতভাবে বসবাস করতে চাইলো। তখন আমরা বাংলাদেশের মানুষ ভাবলাম। এমনিতেই নিজেদের ঠাই নাই। বাড়তি ঝামেলা নিবো কেন? এটা আমাদের দেশের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের জাতীয়তাবোধ মানবতা বিরোধী হইলো। ইহা একটা সম্প্রয়ায়িকতা নয় কি? আমরা তাদের সাদরে গ্রহণ করলাম না। নৌকায় ঘুরতে ঘুরতে অনেকে ডুবে মরলো।
ছোট্টবেলায় দেশপ্রেম বলে আমরা যা শিখছি তা আসলে সাম্প্রদায়িকতাই শিখছি। ধর্মীয় সম্প্রদায়ীকতার চেয়ে এটা কম ক্ষতিকর কি?
(বানান ও ভাষাগত দোষে দুষ্ট হতে পারে এ লেখা। লেখকের নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে লেখা দ্বিমত গ্রহণযোগ্য)
তারিখঃ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫