শ্রমিকরা নিজেদের সবসময় নির্যাতিত ভাবে।
নির্যাতিত না হলেও, হলেও। তারা আজন্ম নির্যাতিত এই শিক্ষা তারা নিজেরা নিজেরা আলাপের মাধ্যমে গ্রহণ করে নিয়েছে -অনেক আগে।
শ্রমিকদের কর্ম জীবনের আলোচনা তাদের মালিক ও বসদের নিয়ে। সহকর্মির জীবনের ঘটনাগুলো তাদের আড্ডায় তেমন রসবোধ আনে না, যতটা মালিকদের ক্ষেত্রে হয়।
শ্রমিকদের যারা পরিচালনা করে, তারাও এক সময় শ্রমিকছিল। বেশি বেতন পাওয়ার কারনে তাদেরকেও অনেকসময় মালিক পক্ষের লোক ভেবে নেয়। শ্রমিকদের মধ্যে মালিক বিদ্বেস কারনে-অকারনে বাড়তে থাকে। এটা প্রকাশ করার সুযোগ হয় না সহজে। সুযোগ হলে মারাত্বক বেপার হতে পারে।
শ্রমিকরা মনে করে তাদের আয় করা টাকা দিয়ে মালিক দামি দামি গাড়ীতে চড়ে। এসি বাড়িতে থাকে। মালিকের কাছের “ভদ্রলোক কর্মকর্তা”দের দালাল মনে করে। যদিও সামনে তারা স্যার বলে সম্মান করে। শ্রমিকরা মালিককে যতটা না ঘৃণা করা তার চেয়ে বেশি এই দালাল শ্রেণীকে করে।
.
শ্রমিকদের বিশ্বাস তাদের অধিকার আদায়ের পথে কর্মকর্তারা দায়ী। মালিক তাদের ভালবাসে ঠিক-ই।
মালিক সামান্য কথায় শ্রমিকদের ঠান্ডা করতে পারে। বেশিভাগ মালিক সেই টেকনিক জানে। শ্রমিক যতটা না টাকা চায় তার চেয়ে বেশি সম্মান চায়। তাদের বেতন অনেক সময় ভদ্রলোকের কাছাকাছি পর্যায়ে চলে যায়, কিন্তু সম্মানটা কখনো দেয় না। “এত বড় প্রতিষ্ঠান তোমাদের পরিশ্রমে হয়েছে।”- এরূপ কথা তাদের সম্মান বাড়িয়ে দেয়। মালিক এটা জানে। অনেক মালিক এই কথা বলে-শ্রমিকদের উজ্জিবিত করে।
তারা চায় তাদের সাথে মালিক ও কর্মকর্তারা প্রতিবেশি সুলভ আচরণ করুক। এরূপ আচরণে শ্রমিক সমাজে তাদের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে যেতে পারে।
.
শ্রমিকদের মন নরম। তারা একটু ভালবাসাকেই বেশি ভালবাসা মনে করে। তারা ভালবাসার সুযোগ নিতে চেষ্টা করে। এজন্য কর্মকর্তারা তাদের সাথে ঘেষাঘেষি সম্পর্ক থেকে দূরে থাকে।
অল্প কিছু বেশি পারিশ্রমিক বা উপহার দিয়ে তাদের বেশি কাজ করিয়ে নেওয়া যায়। প্রতিযোগিতামূলক কাজে তারা দ্বিগুণ পর্যন্ত উৎপাদন বাড়াতে পারে। আবার নিরব প্রতিবাদের মাধ্যমে উৎপাদন অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে। তারা সব সময় একটা নির্দিষ্ট হারে কাজ করে-বেশও না, কমও না। এ জন্য বেশ কিছু কারন আছে-
- বেশি উৎপাদনশীলতা দেখালে মালিক তার টারগেট বাড়িয়ে দিবে।
- তার বেশি উৎপাদনশীলতায় তার সহ-শ্রমিক বন্ধুর উপর কাজের চাপ বাড়বে।
- এখন বেশি উৎপাদনশীলতা দেখালে অন্যসময়ও একই কাজ দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।
- এছাড়াও সময়ভেদে ভিন্ন কারন থাকতে পারে।
(চলতে পারে)